মাঝে মধ্যেই “কোরআন ও নারী”, “ইসলামে নারী” বা “কোরআনের আলোকে নারী” প্রভৃতি শিরোনামের নানা পোস্ট দেখা যায়- যেখানে বিভিন্নভাবে প্রমান করার চেস্টা করা হয় যে, ইসলাম নারীকে ব্যাপক মর্যাদা দেয়, কোরআনে নারীর মর্যাদা অনেক উচ্চে- যেনবা ইসলামের মাধ্যমেই নারীর সমস্ত অধিকার আদায় সম্ভব। বলাই বাহুল্য এগুলোর সবই নানাবিধ মিথ্যায় সাজানো। সবচেয়ে বেশী আপত্তিকর হচ্ছে- মাঝে মধ্যে এমনসব বিষয়ের পক্ষে যুক্তি হাজির করা হয় যেগুলো ইতিমধ্যেই আমাদের সমাজব্যবস্থায়- আমাদের সংস্কৃতিতে পরিত্যজ্য বলে পরিগনিত। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টে কথা বলেছি-আরো অনেকেই অনেক কিছু বলেছেন, চমৎকার সব যুক্তি করেছেন- কিন্তু জাকের নায়েকদের শিষ্যদের কোন লাজ-লজ্জার বালাই নেই, একই কাসুন্দি তারা বারেবারে ঘুরেফিরে বাজাতেই থাকে, বাজাতেই থাকে। আজকের পোস্টে সেগুলো নিয়েই কথা বলবো।
জাকির নায়েকরা কি বলছেন?
আজ সুস্থ বুদ্ধি ও বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তিমাত্রই ইসলামের যে বিষয়গুলো নিয়ে দ্বন্দ্বে থাকে, প্রশ্ন উত্থাপন করে- আপত্তি করে, সেগুলো নিয়ে জাকির নায়েকরা এক ধরণের যুক্তি করার চেস্টা করছে, আর জাকির নায়েকদের এই ব্যাখ্যায় বুঝে হোক আর না বুঝেই হোক- কাঠমোল্লারা দারুন উচ্ছসিত, পায়ের নীচে মাটি পাওয়ার মতই তাদের অবস্থা। আর, তাই জাকির নায়েকরা খুব জোরেশোরে “ইসলাম নিয়ে অমুসলিমদের জিজ্ঞাসার জবাবে”, বা “কোরআন নিয়ে বিভ্রান্তির জবাবে” বা “কোরআন ও বিজ্ঞান” – এমন নানা শিরোনামে তারা বক্তব্য হাজির করছে। অন্য বিষয়গুলো আজ আপাতত আনছি না- শুরুতে ইসলাম ও নারী বিষয়ক আলোচনায় দৃষ্টি দেয়া যাক। এই লেখাটিতে মুহম্মদ সা কে কেন্দ্র করে কোন আলোচনা করছি না কারণ আগেই সেটা যথেস্ট করেছি- যারা এখনও পড়েননি তারা এখানে ও এখানে ক্লিক করতে পারেন।
প্রথমে জাকির নায়েকদের দ্বারা জবাব দেয়া ইসলাম সম্পর্কিত ‘অমুসলিম’দের
(মানে যারাই প্রশ্ন তুলবে- তারাই অমুসলিম!) প্রধান তিনটি প্রশ্ন দেখা যাক:
১। “মুসলমান পুরুষদের একাধিক বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে কেন?”
২। “পুরুষদের একাধিক বিয়ের অনুমতি থাকলেও নারীদের নেই কেন?”
৩। “নারীদের বোরকার আড়ালে রেখে অবমাননা করা হয় কেন?”
প্রশ্ন তিনটিই খুবই যৌক্তিক এবং প্রত্যাশিত। এসবের জবাবাএ জাকির নায়েক গং কি বলছে সেটা দেখি। এর বাইরেও আরো কিছু প্রশ্নকে মোল্লারা “কাফিরদের অভিযোগ” হিসাবে উত্থাপন করে কিভাবে জবাব দেয়ার চেস্টা করে সেগুলোও একে একে আলোচনা করবো। সাথে সাথে এদের করা যুক্তিগুলোও খণ্ডন করার চেস্টা করবো।
১। “মুসলমান পুরুষদের একাধিক বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে কেন?”
জাকির নায়েকের “Answers to the Non-Muslims Common Questions about Islam”
গ্রন্থে অমুসলিমদের করা নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। সরাসরি জাকির নায়েকের
মুখ থেকে এগুলো শুনতে ও দেখতে ইউটিউবে যেতে পারেন।
জাকির নায়েক: এক
কি সেই জবাব- কি সেই যুক্তি? এবারে সেটাই তাহলে সংক্ষেপে দেখা যাক:
“পৃথিবীতে কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র একটি বিয়েই করা উচিত”– ঠিক এমনটি বলেই জাকির নায়েকদের যুক্তির শুরু। যেন বা নৈতিকতার বিচার অন্যসব ধর্মের সাথে তুলনা করেই হয়! মোল্লাদের খুব গর্বের সাথে গল্প করতে শুনা যায়- “বাকী সকল ধর্মগ্রন্থে (রামায়ন, গীতা, বাইবেল…) ইচ্ছেমত বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। পরবর্তীকালে, পুরোহিতরা মিলে একবিবাহ নিয়ম চালু করেন। কিন্তু তাদের ধর্মগ্রন্থতে এব্যাপারে কোন নির্দেশনা নেই। .. ১৯৫০ সালেও ইহুদীদের মধ্যে বহুবিবাহের প্রথা চালু ছিল। তারপর ইহুদী নেতারা এই প্রথা বন্ধ করেন।…. ১৯৫৪ সালে হিন্দু বিবাহ আইনে একবিবাহ প্রথা চালু হয়”।
কথায় আছে- ভেড়ার পালে বাছুর পরমানিক, এ যেন গোবরের সাথে তুলনা করে হাঁস-মুরগীর বিষ্ঠাকে কম দুর্গন্ধময় বলে ঘোষণা দেয়া! কিন্তু এরা যে বুঝতেও পারে না - ধর্মগ্রন্থে না থাকার পরেও যুগপ্রয়োজনে- সময়ের পরিবর্তনে ধর্মীয় প্রথাকে পাল্টিয়ে দেয়া যে কত মহৎ, কত বৈপ্লবিক!
যাহোক- একদম শুরুর যে দাবি- সেটা জাকির নায়েকরা কিসের ভিত্তিতে বলছে?
কোরআনে বলা হয়েছে:
“মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও, দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। তবে যদি আশঙ্কা হয় যে, তাদের সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরন করতে পারবে না তবে শুধুমাত্র একটি।” আল কোরআন (৪:৩)।
এবং:
“তোমরা চাইলেও নারীদের মাঝে ন্যায়বিচার করতে পারবে না…।” আল কোরআন (৪:১২৯)।
সুরা নিসার ৩ নং আয়াত এবং ১২৯ নং আয়াতের প্রথম বাক্যকে পাশাপাশি রেখে
এরা এমনই ধারণা তৈরি করতে চায় যে- কোরআন অনুযায়ি- চারটি পর্যন্ত বিয়ার
অনুমতি থাকলেও তার ক্ষেত্রে শর্ত প্রযোজ্য এবং মূল শর্তটি হচ্ছে স্ত্রীদের
সাথে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করতে হবে এবং ন্যায়বিচার করতে না পারার আশংকামাত্র
থাকলেই শুধুমাত্র একটা বিয়ে করতে হবে (৪:৩) এবং স্পষ্টতই আল্লাহ জানিয়ে
দিচ্ছেন- চাইলেও নারীদের মধ্যে ন্যায়বিচার করা সম্ভব না (৪:১২৯)- সেহেতু
চুড়ান্ত বিচারে দাঁড়াচ্ছে- কোরআনে একটি বিয়ের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।
জাকির নায়েকের এই যুক্তিটুকু পড়লে বা শুনলে মনে হয় বাহ কি সুন্দর, ভালোই
তো! কিন্তু জাকির নায়েক সম্পর্কে পূর্ব ধারণা থাকায় জানি যে, এই লোক নিজের
যুক্তি সাজাতে মিথ্যাচার করতে, কোরআনের আয়াত নিজের ইচ্ছামত ব্যবহার করে
সুকৌশলে নতুন ব্যাখ্যা হাজির করতে- এমনকি মাঝে মধ্যে কোরআনের আয়াত-শব্দের
প্রচলিত অর্থ পাল্টে ফেলতে সিদ্ধহস্ত। তাই সুরা নিসার ৩ নং ও ১২৯ নং আয়াত
দুটি একটু যাচাই করার চেস্টা করি। ১২৯ নং আয়াতটি পুরো পড়লেই বুঝা যাবে:
And you will never be able to be equal [in feeling] between wives, even if you should strive [to do so]. So do not incline completely [toward one] and leave another hanging. And if you amend [your affairs] and fear Allah – then indeed, Allah is ever Forgiving and Merciful.
অর্থাৎ, “তোমরা চাইলেও নারীদের মাঝে ন্যায়বিচার করতে পারবে না”- এটা বলার পরপরেই যখন আল্লাহ মুমিন বান্দাদের উদ্দেশ্যে আহবান জানায়- “সুতরাং তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পূর্ণ ঝুঁকে পড়ো না ও অন্যজনকে ত্যাগ করো না”- তখন কি বলা যায়, জাকির নায়েক এর টানা সিদ্ধান্তটা খোদ আল্লাহর টানা সিদ্ধান্তর অনুরূপ? একটা ফিল্ম এপ্রিসিয়েশন কোর্স করেছিলাম- সেখানে আইজেনস্টাইনের মনতাজ সম্পর্কে কিছু লেকচার দেয়া হয়েছিল। বিষয়টা অনেকটা এরকম। (আমার উদাহরণে বলছি)- ধরেন বারাক ওবামার একটা ৫ সেকেন্ডের শট – যেখানে ওবামা খুব উৎফুল্ল- দারুন হাসিখুশী- হাত তালি দিচ্ছেন। এডিটিং প্যানেলে এই শটের আগে আরেকটি শট যেখানে দেখা যায় ইরাকে বোমা ফেলা হচ্ছে- সেটা যুক্ত করে দিলে একরকম অর্থ তৈরি হয়, আবার পূর্ববর্তী শটে যদি নির্বাচনে জেতার নিউজ দেখানো হয় তবে আরেক অর্থ, পূর্ববর্তী শটে মিশেল ওবামাকে দেখালে একরকম অর্থ- আর হিলারি ক্লিনটনকে দেখালে আরেক রকম ইমপ্রেশন তৈরি হয়। সুরা নিসার দুই জায়গার দুটি আয়াতকে পাশাপাশি বসিয়ে একরকমের ইমপ্রেশন তৈরি চেস্টা দেখে মনে হলো- জাকির নায়েক ফিল্ম ডিরেকটর হলে খুব ভালো করতেন।
যাহোক, মোল্লাদের আরেকটি যুক্তি খুব জোরের সাথে করতে দেখা যায়- সেটা হলো: একের অধিক বিয়ে (চারটি পর্যন্ত) বিয়ে তো ফরজ না, সুন্নতও না, ওয়াজিব না, মুস্তাহাবও না। এটা কেবলমাত্র মুবাহ, মানে করলেও হয়- না করলেও হয়, একে কখনো উৎসাহিত করা হয়নি। অনেকে রেগে গিয়ে বলেই বসে- “আপনাকে তো বহুবিবাহ করতে বাধ্য করছে না- আপনার করতে ইচ্ছা না হলে করবেন না”। অবাক হয়ে ভাবি- এরা কি আপত্তির জায়গাটাই ধরতে পারছে না? বহুবিবাহ কেন নিষিদ্ধ নয়? কেন এটা একজন পুরুষের মর্জির উপর ছেড়ে দেয়া হলো? যে বহুবিবাহ করতে চায় না তাকে বাধ্য করা হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু মূল প্রশ্নতো- যে কামুক ব্যক্তি একের পর এক বিয়ে করে যেতে চায়- তার জন্য কি কোন বাধ্যবাধকতা রাখতে পেরেছে কোরআন?
না পারেনি। তবে কেন বাধ্যবাধকতা রাখেনি সেটার একটা বৈজ্ঞানিক কারণ হাজির করেছে জাকির নায়েকরা। বড়ই অভিনব সে কারণ। সেটাই তাহলে শুনি:
“সাধারনত নারীশিশু ও পুরুষশিশু সমান অনুপাতে জন্মায়। তবে নারীশিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বিধায়, তুলনামূলক নারীশিশু বেশি বাঁচে। এছাড়াও যুদ্ধ-বিগ্রহে, নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যুর হার বেশি। দুর্ঘটনা ও রোগে, পুরুষদের মৃত্যুর হার বেশি। এটা স্বীকৃত যে, পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশিদিন বাঁচে। এসব কারনে, যেকোন নির্দিষ্ট সময়ে জরিপ করলে দেখা যায়, বিপত্নীকদের চেয়ে বিধবার সংখ্যা বেশি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা ৭৮ লক্ষ
বেশি। শুধুমাত্র নিউইয়র্কে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা ১০ লক্ষ বেশি।
নিউইয়র্কে মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ নারী। যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ৫০ লক্ষ
পুরুষ সমকামী (নারীদের বিয়ে করতে উৎসাহী নয়)। কাজেই, যদি একজন পুরুষ একজন
নারীকে বিয়ে করে তাহলে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ৩ কোটি নারী সঙ্গীহীন থেকে
যাবে। একইভাবে যুক্তরাজ্যে ৪০ লক্ষাধিক, জার্মানীতে ৫০ লক্ষাধিক, রাশিয়ায়
৯০ লক্ষাধিক নারী সঙ্গীহীন থাকবে। ধরা যাক, আমার বোন যুক্তরাষ্ট্রে
সঙ্গীহীন অবস্থায় আছে অথবা ধরুন আপনার বোন যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গীহীন রয়েছে।
তাহলে, তার সামনে ২টি পথ খোলা আছে।
১. বিবাহিত কোন পুরুষকে সঙ্গী হিসেবে মেনে নিতে হবে।
২. ‘জনগণের সম্পত্তি (public property) হতে হবে।”
এই যুক্তি অভিনব তো বটেই, তারচেয়ে বেশি এটা অশ্লীল। সঙ্গীহীন থাকলে আমার বোনের সামনে দুটো পথই খোলা থাকবে? বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করতেই হবে, নচেত প্রোস্টিটিউশনে নামতেই হবে? এই যুক্তির পক্ষে বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলা হচ্ছে:
“এটা ঠিক যে, অধিকাংশ নারীই স্বামীকে শুধু নিজের বলেই প্রত্যাশা করেন। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে এই ক্ষুদ্র প্রত্যাশা ত্যাগ করা শ্রেয়”।অবাক লাগে- কতখানি পারভার্ট হলে এমন কথা লোকে বলতে পারে! নারীদের এরা কি চোখে দেখে? আর জাকির নায়েক যে তথ্য-উপাত্ত দিয়েছে সেখানেও একটা বড় রকমের ফাঁক আছে। সেটাই এবারে দেখি:
জাকির নায়েকের তথ্যমতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, রাশিয়ায়
পুরুষের চেয়ে নারীর মোট সংখ্যা বেশি। ঠিক আছে। কিন্তু গোটা দুনিয়ায়
নারী-পুরুষ এর অনুপাতটা কেমন? এই অনুপাত- ১:১.০৫, মানে পুরুষের সংখ্যাই
বেশী।
এবারে আসুন বয়সের হিসেবে দেখি-
নারী:পুরুষ-
জন্মের সময়- ১:১.০৫
১৫ বছরের নিচে- ১:১.০৫
১৫-৬৪ বছর- ১:১.০২
৬৫ কিংবা তদুর্ধ- ১:০.৭৮
কাজেই দেখা যাচ্ছে এই যুক্তি তখনই খাটে যখন নবীন পুরুষ অতি প্রবীণ নারীদের বহুবিবাহ করে!!!!
এবার, জাকির নায়েকদের উল্লেখ করা যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যাক।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৩৪,৭৭৪,৮৯৪ জন পুরুষ এবং ১৪০,৭৮৭,৭৭৯ জন নারী।
অর্থাৎ ৬ মিলিয়নের মত নারী বেশি। এদের মধ্যে ৫.৯ মিলিয়নই কিন্তু ৬৫ বছরের উর্ধে!!
সেখান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ১৮ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত নারী পুরুষের অনুপাত প্রায় সমান। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষেরা মোটামুটি ১৮-৪০/৪৫ বছর বয়সে তাদের প্রথম বিয়ে করে থাকে বলেই জানি। সেক্ষেত্রে এক পুরুষ এক নারী বিয়ে করলে অনেক নারীকে বিয়ে করার মত পুরুষ পাওয়া যাবে না বলে যে দাবী করা হচ্ছে তা অবান্তর।
আর, ৬৫ উর্ধ নারীদের সংখ্যা বেশী। সেক্ষেত্রে দুটো বিষয় হতে পারে। এক: এরা বিবাহিত কিন্তু স্বামী মারা গিয়েছে অর্থাৎ এরা বিধবা; অথবা এরা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত কোন কোন কারণে বিয়ে করেনি।
এই অংশটুকু যদি স্বামীর ঘর করতে চায় তবে পুরুষ পেতে সমস্যা হতে পারে। বিধবাদের ক্ষেত্রে বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় সন্তান-সন্ততি, নাতিপুতি নিয়েই এমন ব্যস্ত এবং সামাজিক অবস্থা এমনই যে বিয়ে করা হয় না, বা বিয়ে করার চিন্তাই মাথাতে আসে না। কেননা, মেনোপেজের পরে শারীরিক চাহিদাটাও সেরকম থাকে না, ফলে সঙ্গী শুধু মানসিক সঙ্গের জন্যই প্রয়োজন হতে পারে, সেটা সামাজিক পরিমণ্ডলই পূরণ করতে পারে। আর যাই হোক পোস্টদাতার কথা মত অন্য বউ আছে এমন লোককে ৬৫ বছরের এক বুড়ি বিয়ে করতে না যাওয়ারই কথা, আর পাবলিক সম্পত্তিতে পরিণত হওয়াটা তো শুধুই পাগলের প্রলাপ। আর ৬৫ বছর পর্যন্ত বিয়ে না করে থাকলে, ৬৫ বছর পার হওয়ার পরে বিয়ে করার জন্য উতলা হবে এমন সম্ভাবনাও কম দেখি। আর যদি ৬৫ বছরে এসে বিয়ে করতে মনস্থির করে শেষে পাত্র যদি নাই পাওয়া যায়, তবে সেটাও মনে হয় সেই নারী মেনেই নিবেন। পাবলিক সম্পত্তিতে পরিণত হওয়া বা সতীনের ঘরে প্রবেশ করার সম্ভাবনা পোস্টদাতার মত কিছু ধর্মান্ধের প্রভাবপুষ্ট নারী আত্মীয় স্বজনেরা ব্যতিত কমই দেখি।
এবারে আসুন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যেখানে বহুবিবাহের হার অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি সেগুলোর নারী-পুরুষের অনুপাত দেখি-
নারী : পুরুষ-
বাহরাইন- ১ : ১.৩
জর্দান- ১ : ১.১
কুয়েত- ১ : ১.৫
ওমান- ১ : ১.৩১
কাতার- ১ : ১.৯৩
সৌদি আরব- ১ : ১.২৪
আরব আমিরাত- ১ : ১.৫১
(২০০০ সাল পর্যন্ত) (সূত্র: উইকিপিডিয়া এবং সি আই এ ফ্যাক্ট বুক)
উপর থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এরা কেউই নারীর আধিক্যের কারণে বহুবিবাহ করেনা। এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে এই নারীদের অনেকেই ৬৫ বছরের উর্ধে, কাজেই বিবাহযোগ্য নারীর সংখ্যা কিন্তু আরো কমে যাচ্ছে!!
অনেককে আবার এমনও যুক্তি করতে শুনা যায়:
“বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বহু বিবাহ প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সে প্রয়োজনকে সামনে রেখেই ইসলাম বহু বিবাহের অনুমোদন দান করেছে। এখন আসুন আমরা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি বহু বিবাহের সেই বিশেষ প্রয়োজনীয় দিক গুলি কি কি? (১) কেউ তার বংশের ধারা অব্যাহত রাখতে ইচ্ছুক; কিন্তু তার বর্তমান স্ত্রী সন্তান ধারণে অক্ষম। এ ক্ষেত্রে পুরুষ বর্তমান স্ত্রীকে সাথে রেখে আরেকটি বিয়ে করতে পারেন। (২) বর্তমান স্ত্রী স্বামীর যৌন চাহিদা মিটাতে অক্ষম হলে (৩) কোন কোন মানুষের যৌন শক্তি খুব প্রবল ও প্রচন্ড হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তার একাধিক বিয়ের প্রয়োজন হতে পারে। (৪) যুদ্ধ বিগ্রহ-মহামারী- দুর্ঘটনা ইত্যাদির কারণে কোন দেশে পুরুষের সংখ্যা সাংঘাতিক ভাবে হ্রাস পেলে মহিলাদের সার্থেই বহু বিবাহ প্রয়োজন হতে পারে। উপরোক্ত ক্ষেত্রে সমাজ এবং মহিলাদের উচিৎ সহেযোগীতা করা”।
এই সমস্ত যুক্তিকে মানতে হলে- আরো কিছু প্রশ্ন চলে আসে- জাকির নায়েকরা সেসবের জবাব কেমন করে দিবেন?
# এই সমস্ত ঘটনা কোন নারীর সাথে হলে , মানে ১) কেউ তার বংশের ধারা অব্যাহত
রাখতে ইচ্ছুক; কিন্তু তার বর্তমান স্বামী সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হলে, (২)
বর্তমান স্বামী স্ত্রীর যৌন চাহিদা মিটাতে অক্ষম হলে (৩) কোন কোন স্ত্রীর
যৌন শক্তি খুব প্রবল ও প্রচন্ড হলে (৪) কোন কারণে কোন দেশে নারীর সংখ্যা
সাংঘাতিক ভাবে হ্রাস পেলে —— তখন কি নারীর বহু স্বামী জায়েজ হবে?
# যদি লিঙ্গনির্দিষ্ট গর্ভপাত নাও করা হয়, জীববৈজ্ঞানিক নিয়ম অনুসারেই একটি
জনগোষ্ঠীতে জন্মগ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়ে শিশুর অনুপাতের থেকে ছেলে শিশুর
অনুপাত বেশি থাকে (জার্মানিতে ৯৪:১০০)। কিন্তু সমান সুযোগ-সুবিধা পেলে
বিভিন্ন বয়স-বর্গে মেয়েদের থেকে ছেলেদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি হওয়ার ফলে
মোট জনসংখ্যায় নারীর আধিক্য দেখা যায়। বাংলাদেশে লিঙ্গনির্দিষ্ট গর্ভপাত
ধর্তব্যের মধ্যে না হলেও, খাদ্য, পুষ্টি, চিকিৎসা পরিষেবা ও পরিচর্যার
ক্ষেত্রে বৈষম্য থাকায় পুরুষের আধিক্য (১০৬:১০০) রয়েছে। আপনাদের বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা (!) অনুযায়ী এখানে প্রায় ৩০ লক্ষ পুরুষ অবিবাহিত থেকে যাবে। তাদের
জন্য সমাধান কি?
# যুক্তরাষ্ট্রের সমকামী পুরুষদের হিসাবের পাশে সমকামী নারীর হিসাবকে কেনো গোপন রাখা হলো?
# পাশ্চাত্যে যেমন অনেক পুরুষ বিবাহের বাইরে সম্পর্ক বজায় রাখে, অনেক নারীও নিশ্চয়ই রাখে। এই প্রসঙ্গ কতটা প্রাসঙ্গিক?
২। পুরুষদের একাধিক বিয়ের অনুমতি থাকলেও নারীদের নেই কেন?
জাকির নায়েকের কাছ থেকে শুনতে ইউটিউবে যান।
জাকির নায়েক: তিন
সুরা নিসায় (৪:২২-২৪) এমন নারীদের তালিকা দেয়া আছে যাদের মুসলমান পুরুষ বিয়ে করতে পারে না। সেখানে বিবাহিত নারীদের কথাও বলা আছে। অর্থ্যাৎ, বিবাহিত নারীদের বিয়ে করা মুসলমান পুরুষদের জন্য নিষিদ্ধ। নারীদের বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার জন্য কারণ হিসাবে জাকির নায়েকরা যেসব যুক্তি হাজির করেছেন সেগুলো হচ্ছেঃ
১) “একজন পুরুষ যদি একাধিক বিয়ে করে তাহলে সহজেই তার সন্তানের পরিচয় পাওয়া যায়। অর্থ্যাৎ, আলাদাভাবে সেই সন্তানের পিতা-মাতা সনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু যদি একজন নারী যদি একাধিক বিয়ে করে তাহলে জাত সন্তানের পিতার পরিচয় নিয়ে সংশয় হতে পারে। ইসলামে মাতা-পিতা উভয়েরই সণাক্তকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যে সন্তান তার মাতা-পিতা এবং বিশেষত পিতার পরিচয় জানে না তারা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জীবনের প্রতি পদক্ষেপেই সন্তানের তার পিতার নামের প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে সেই সন্তানের পিতার নাম কি একাধিক হবে? যদিও আমরা জানি যে, বর্তমানে বিজ্ঞান যথেষ্টই উন্নতি সাধন করেছে এবং আজকাল নিভূলভাবে পিতা-মাতার সণাক্তকরন সম্ভব। সেক্ষেত্রে হয়তো বিষয়টি বর্তমানের জন্য প্রযোজ্য নয়। কিন্তু এই প্রযুক্তি এই তো সেদিনের, আর ইসলাম সবসময়ের ধর্ম- কিছুদিন আগেও এতা সনাক্ত করা সম্ভব ছিল না।”
২) “প্রকৃতিগতভাবেই বহুবিবাহের ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পুরুষেরা বেশি আগ্রহী। পুরুষ স্বভাবতই বহুগামী। একইকারনে, একজন পুরুষ একের অধিক স্ত্রীর প্রয়োজন পূরণে সক্ষম। কিন্তু একজন নারী সাধারনত এই সক্ষমতার অধিকারী নয়”।
৩) “আলাদা আলাদা পুরুষের প্রয়োজন পূরণ করতে গিয়ে একজন নারী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে। শারীরিক প্রয়োজন পূরণের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। শারীরিক প্রয়োজন মেটানোর তাগিদ নারীর চেয়ে পুরুষের বেশি”।
৪) “যদি নারীর একাধিক স্বামী থাকে তবে দেখা যাবে, একই সময়ে তাকে একাধিক পুরুষের প্রয়োজন পূরণ করতে হতে পারে। আর এভাবে যৌনবাহিত বিভিন্ন রোগের ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবণা অত্যধিক। কিন্তু বিপরীতক্রমে, একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী থাকার ক্ষেত্রে এই সমস্যার উদ্ভব হয় না”।
জাকির নায়েকদের করা উপরের যুক্তিগুলো একাধারে মিথ্যাচার ও ভুলে ভরপুর,
অশ্লীল, উদ্ভট এবং বিকৃত মস্তিস্কজাত। সেগুলো নিয়ে ধরে ধরে কথা বলার আগে-
মানব ইতিহাসের দিকে একটু দৃষ্টি দেই। আমরা জানি যে- একসময় মানুষের
সমাজব্যবস্থা ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং তখন নারীদের বহুগামিতা সামাজিকভাবে
সমর্থনযোগ্য ছিল। সে সময়ে সন্তানেরা কেবল মায়ের পরিচয়েই বেড়ে উঠতো। বলা হয়ে
থাকে- দুনিয়ার প্রথম ডিফাইনড সম্পর্ক হচ্ছে “মা”। আজকের যুগেও তিব্বত-
নেপাল সহ অনেক জায়গাতেই নারীর বহুবিবাহের চল আছে। নীচের এই ভিডিওতে নেপালের
এমনই একটি পরিবারকে দেখা যাচ্ছে।
নারীর বহুবিবাহ: নেপাল
এবারে জাকির নায়েকদের করা (কু)যুক্তিগুলো একে একে দেখা যাক:
১) নারীর একাধিক স্বামী থাকলে, সন্তানের বাবাকে নির্দিষ্ট করণ আজ সম্ভব।
সবসময়ের ধর্ম বলে যে দাবী সেটা খাটে না কারণ- কোন নিয়ম-কানুনই সবসময়ের জন্য
একই থাকতে পারে না, যেহেতু মানুষ-মানুষের সমাজ- তার জানা বুঝা- আহরিত
জ্ঞান, বিজ্ঞান-প্রযুক্ত সবই পরিবর্তনশীল। আর, বাবা কে না জানলে সন্তান খুব
কষ্টে থাকে – এটাও যে মিথ্যা সেটা উপরের ভিডিওতে নেপালের সন্তানদের দেখেই
বুঝতে পারছেন। জাকির নায়েক সোসাল সাইকোলজির এই দিকটা বেমালুম চেপে গেছেন ।
আমাদের এই সমাজে কয়েক জন বাবা থাকাটাকে আমরা “খারাপ” বলি বলেই সন্তান
নির্দিষ্ট বাবার পরিচয়ের অভাবে মানসিকভাবে সমস্যায় ভোগে- কিন্তু বুঝতে হবে
সেটা এই সমাজই সন্তানকে অমন করতে বাধ্য করে। যে সমাজে কোন সন্তানের একাধিক
বাবা থাকাটা খুব স্বাভাবিক, সেখানে সন্তান একাধিক বাবা দেখেই অভ্যস্ত এবং
এটাতে সে মানসিকভাবে কোন সমস্যায় না ভুগারই কথা।
২। পুরুষ স্বভাবতই বহুগামী – কথাটাই আপত্তিকর। পুরুষরা কি সারাক্ষণ বহুনারীতে উপগত হইবার চিন্তায় ব্যস্ত থাকে? আর যদি থাকেই , তাহলে নিজের চারটা স্ত্রী থাকলেও তারা ৫ম, ৬ষ্ঠ কোন নারির প্রতি আকর্ষিত হতে পারে?
৩। মানসিক ও বায়োলজিকাল কারনে নারী বহু স্বামীর সাথে ঘর করতে পারে না – এটাও নেপালের ভিডিও দেখে বুঝবেন যে মিথ্যা । শিডুল মেনে সব কয়জন স্বামীর সাথেই সুখে দাম্পত্য করতে দেখা যাচ্ছে নেপালী বউদের ।
৪। বহু স্বামী থাকলে যৌন রোগের সম্ভাবনা আছে, বহু স্ত্রী থাকলে নাই- এমন কথা একজন মূর্খের পক্ষেই বলা সম্ভব। জাকির নায়েকদের মুখ থেকে এই ধরনের “জেন্ডার বেসড” রোগের নাম শুনতে পারলে ভালো হতো। আর, রোগ ছড়ানোর ব্যাপারে- নারীর বহুগামিতা নয়, একগামি পুরুষ থেকে নারীতে বা নারী থেকে পুরুষে যৌনবাহিত রোগ ছড়াতে পারে। ফলে- এক পুরুষের একাধিক স্ত্রী থাকলে কোন একজনের যৌনবাহিত রোগ হলে সেটা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে- সেক্ষেত্রে রোগের বাহক হিসাবে স্বামী ব্যবহৃত হবে, অপরদিকে এক নারীর একাধিক স্বামী থাকলে- কারো কোন যৌনবাহিত রোগ হলে- ঐ নারী বাহক হিসাবে কাজ করবে।
৩। নারীদের বোরকার আড়ালে রেখে অবমাননা করা হয় কেন?
এবারেও জাকির নায়েকের বক্তৃতা শুনে ও দেখে আসুন।
জাকির নায়েক: চার
জাকির নায়েকরা এই প্রশ্নের জবাবের শুরুতেই – আগের সমাজগুলোতে নারীর অবস্থা কেমন ছিল সে সম্পর্কে একটা লম্বা ফিরিস্তি দেয়। ব্যবিলীয়নীয় যুগে, গ্রীক সভ্যতায়, রোমান সভ্যতায়, মিশরীয় সভ্যতায় এবং ইসলাম পূর্ব আরবে নারীদের খুব খারাপ অবস্থা ছিল- নারীদের জ্যান্ত পুড়ানো হতো- মেরে ফেলা হতো, নগ্নতা – পতিতাবৃত্তি খুব সাধারণ ছিল, নারীরা সব ধরণের অধিকার ও সুবিধা বঞ্চিত ছিল.. ইত্যাদি। এমন ঢালাও আলাপ যে প্রলাপমাত্র তা বলাই বাহুল্য, ইতিহাস নিয়ে যাদের নাড়াচাড়া আছে- তারা এটা জানে। যাহোক, জাকির নায়েকদের আলোচনায় ফিরে যাই। তাদের এই ফিরিস্তি হাজির করার উদ্দেশ্য ভালোই বুঝা যায়। তারা এই ফিরিস্তি দেয়ার মাধ্যমে এটাই প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে- ইসলামই প্রথম নারীদের তাদের সুষম মর্যাদায় অধিষ্টিত করেছে এবং এই মর্যাদা যেন বলবৎ থাকে তার ব্যবস্থাও ইসলাম করেছে, অর্থাৎ ইসলাম যেসমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে তা এই মর্যাদা বলবৎ রাখার জন্য। কি সেই ব্যবস্থা? নারীদের হিজাব।
কোরআনে বলা হয়েছে:
“মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন দৃষ্টি নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া তারা যেন সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তারা যেন মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে। তারা যেন স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাদী, যৌণকামনামুক্ত পুরুষ বা বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতিত কারও কাছে সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য তারা যেন জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগন, তোমরা আল্লাহর সামনে তওবা কর যেন সফলকাম হতে পার।” [সুরা আন-নূর (২৪:৩১)]
হিজাবের অত্যাবশ্যকীয়তা নিয়ে কোরআনে বলা হয়েছে:
“হে নবী, আপনি আপনার পত্নীগণ, কন্যাগণ, ও মুমিন স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের অংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়, এতে তাদের চেনা সহজ হবে এবং তারা উত্যক্ত হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালূ।” [সুরা আল-আহযাব (৩৩:৫৯)]।
নানা কথার ভিতর দিয়ে আসলে এই হিজাবের পেছনে একটি যুক্তিই পেলাম। তা হলো মোদ্দা কথায়- নারীরা হিজাব না পরলে- পুরুষদের কাম জাগ্রত হতে পারে। জাকির নায়েকরা একটা চমৎকার (!) উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা বুঝিয়ে দেয়:
“দুজন যমজ বোনের কথা ধরা যাক। তারা দুজনই সমান সুন্দরী। রাস্তায় হেটে যাবার সময় তাদের একজন ইসলামী হিজাব পরিধান করেছে অর্থ্যাৎ সম্পূর্ণ দেহ কাপড়ে আবৃত শুধু মুখ ও হাতের কব্জি বাদে। এবং অন্যজন পাশ্চাত্যের মিনি স্কাট ও শটস পরেছে। রাস্তার পাশে কিছু বখাটে ছেলে বসে আছে। আপনার কী মনে হয়, তারা এই দুই বোনের মধ্যে কাকে উত্যক্ত করবে? যে ইসলামী হিজাব পরিধান করেছে তাকে নাকি যে পাশ্চাত্যের পোশাক করেছে তাকে। নিঃসন্দেহে যে পাশ্চাত্যের পোশাক পরেছে তাকে। আসলে এই ধরনের পোশাক বিপরীত লিঙ্গকে আগ্রাসী হবার পরোক্ষ আমন্ত্রণ জানায়”।
বখাটে ছেলেরা তো হিজাব পরিরহিত একজনকেও উত্যক্ত করতে পারে, আমার প্রশ্ন হলো- ঐ জায়গায় জাকির নায়েক থাকলে কাকে করতো? কোনজনকে দেখে উত্যক্ত করতেন বা তার কামের উদ্রেক ঘটতো? যাহোক, নায়েকদের কথা আরেকটু শুনি। পাশ্চাত্যের তথা যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের নগ্নতা জাকির নায়েকদের মোক্ষম যুক্তি, সর্বশেষ অস্ত্র। জাকির নায়েকরা যুক্তরাষ্ট্রকে পৃথিবীর সর্বাধিক উন্নত দেশ হিসাবে অভিহিত করে জানান দেয় যে- যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের সংখ্যাও সর্বাধিক। শেষে চমৎকার একটা সমাধানও দেয়া হলো, “কোন নারীকে দেখামাত্র পুরুষ তার দৃষ্টি নত করবে, নারীরা ইসলামী হিজাব পরিধান করবে এবং এরপরও যদি কোন ব্যক্তি ধর্ষণ করে তবে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে”। জাকির নায়েকরা নিশ্চিত, এতে করেই যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণ একদম না-ই হয়ে যাবে। যেনবা, যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশগুলোতে ধর্ষণের মূল কারণ নারীদের বেপর্দা থাকা বা হিজাব না পরা! আজব!!
যুক্তরাষ্ট্রের গল্প শোনানো হচ্ছে- কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য বা আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নারীর সেক্সুয়াল এবিউজমেন্টের হার কি কম? এইসব অঞ্চলে- বেশীরভাগ ঘটনাই প্রকাশ পায় না- আড়ালে থেকে যায়। সেদিন একটি রিপোর্টে পড়ছিলাম- শিশুকন্যার সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট নিয়ে- আমাদের মতো দেশগুলোতে ৬০ ভাগেরও বেশী শিশুকন্যা সেক্সুয়ালি কোন না কোন ভাবে হ্যারাজড হয় (শিশুকন্যা বলতে ১২/১৪ বছর বয়সের পূর্বে বাচ্চাদের বুঝিয়েছে)। আরো মজার কাহিনী হচ্ছে- এদের ৯০ ভাগেরও বেশী হ্যারাজড হয় না কি ফ্যামিলি মেম্বারদের দ্বারা- কাজিন, চাচা-মামা-দাদা কেউ সেই লিস্ট থেকে বাদ নেই! ঐ বাচ্চাগুলোকে বোরখা দিয়ে ঢেকে রাখলেই এসব বন্ধ হবে?
আর, উত্যক্ত করার যে উদাহরণটা জাকির নায়েক দিয়েছে- সেটা তার সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলকে তুল্যজ্ঞান করেই দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, উত্যক্ত করাটা সংস্কৃতি ভেদে ভিন্ন হবে। যে সমাজে মিনি স্কার্ট ও শর্টস একটি স্বাভাবিক পোষাক হিসেবে ব্যবহৃত ও স্বীকৃত কিন্তু হিজাব নয়, সেখানে হিজাবধারীকে উত্যক্ত করা হতে পারে। আর যে সমাজে হিজাব স্বাভাবিক, শর্টস ও মিনি অব্যবহৃত সেখানে উল্টো ঘটনা ঘটবে।
নীচে দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু আদিবাসীদের নাচের একটা ভিডিও দেয়া হলো, এই লিংকে (Pretty Zulu Girls show their Wedding Dance. ও ইথিওপিয়া) আর কিছু ভিডিও আছে,- দেখে আমাকে বলেন- এই সব ন্যাংটো-আধা ন্যাংটো ট্রাইবাল নারীদের বুক পাছা দেখে জাকির নায়েকদের যেমন অনুভূতি হয়- তা কি ওদের পুরুষদেরও হয়?
শুধু একটা তথ্য দিতে পারি- এইসব ন্যাংটো মেয়েদের দিনে রাতে দেখেও ওদের পুরুষেরা উত্যক্ত করার কথা কল্পনাও করতে পারেনা, এরা হয়তো- অন্য সমাজের পুরুষদের (যারা নিজেদের সমাজে লজ্জা নিবারনের পোষাকে অভ্যস্ত) হাতে রেপড হতে পারে- কিন্তু এখানকার পুরুষদের হাতে তাদের নারীদের রেপ করার তেমন কোন নজির নেই।
পরিশিষ্ট:এক
এসব প্রশ্নের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আছে, কিন্তু সেগুলো নিয়ে
উল্লেখযোগ্য তেমন কোন আলোচনা পেলাম না। প্রশ্নগুলো এখানে উল্লেখ করছি।
জাকির নায়েক বা অন্য কোন মোল্লাকে এসবের জবাব দেয়ার চেস্টা করতে দেখলে-
অনুগ্রহ করে একটু জানান দিয়েন।
১) কোরআনে যেহেতু একজন পুরুষের স্থলে দু’জন নারী সাক্ষীর কথা বলা আছে কেন?
এর মধ্য দিয়ে দুইজন পুরুষকে একজন নারীর সমকক্ষ হিসাবে কি গণ্য করা হলো না?
২) কোরআনে স্ত্রীকে বেধরক প্রহারের অধিকার স্বামীকে দেয়া হয়েছে। এটা কি
অমানবিক নয়? একই অধিকার স্ত্রীকে দেয়া হয়নি কেন? এটা কি সম অধিকার বা
ন্যায়পরায়নতা প্রকাশ করে?
৩) কোরআনে নারীদের মাসিক রজঃস্রাবকে অশুচি হিসাবে গণ্য করা হয়েছে কেন?
এসময়ে নারী কেন ধর্মীয় কাজকর্মের (নামাজ-রোযা প্রভৃতি) পর্যন্ত অধিকার পাবে
না?
৪) কোরআনে স্ত্রীকে শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করে হেয় করা হয়নি কি?
৫) কোরআনে যেহেতু নারীকে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি দেয়া হয়েছে। কেন? এর মধ্য
দিয়ে কি প্রমাণ হয় না যে নারী-পুরুষকে সমান অধিকার দেয়া হয়নি?
৬) কোরআনে অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করাকে নিষিদ্ধ করা হয় নি কেন?
৭) কোরআনে অমানবিক হিলা বিয়ের কথা লিখা আছে কেন?
৮) কোরআনে যুদ্ধবন্দী/ক্রীতদাসীদের সাথে সেক্স করার কথা লিখা আছে- এটা অমানবিক নয় কি? (এ প্রসঙ্গে মাহমুদ রহমানের এই পোস্টও দেখেতে পারেন।)
পরিশিষ্ট:দুই
পরিশেষে, প্রাসঙ্গিক কিছু কোরআনের আয়াত উল্লেখ করাও হচ্ছে:
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্খা কর এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। ২-২২৩
আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ্ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়। আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ্ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ। ২-২২৮
আল্লাহ্ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন: একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। অত:পর যদি শুধু নারীই হয় দু-এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অত:পর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যেতর পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ। ৪-১১
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋনের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। আল্লাহ্ তাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া। এবং ঋন গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহ্কে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে। অত:পর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ হয় কিংবা দূর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লিখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন ডাকা হয়, তখন সাক্ষীদের অস্বীকার করা উচিত নয়। তোমরা এটা লিখতে অলসতা করোনা, তা ছোট হোক কিংবা বড়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহ্র কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরপর হাতে হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এরূপ কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহ্কে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ্ সব কিছু জানেন। ২-২৮২
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অত:পর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। ২-২৩০
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ্ তার কাজ সহজ করে দেন। ৬৫-৪
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ্ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। ৪-৩৪
সকল সধবা নারীদের তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে, কিন্তু তোমাদের স্বত্বাধীন যেসব দাসী রয়েছে তাদের হারাম করা হয়নি। এ হল তোমাদের জন্য আল্লাহর বিধান। এদের ছাড়া অন্য সব নারীকে তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে এ শর্তে যে, তোমরা তাদের কামনা করবে অর্থের বিনিময়ে বিয়ে করার জন্য, ব্যভিচারের জন্য নয়। বিয়ের মাধ্যমে যে নারীদের তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের দিয়ে দিবে তাদের নির্ধারিত মহর। আর তোমাদের কোন গুনাহ হবে না যদি মহর নির্ধারণের পর তোমরা কোন বিষয়ে পরষ্পর সম্মত হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, হেকমতওয়ালা। ৪-২৪
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
সামহোয়ারইনব্লগের রাগ ইমন, আমি ও আঁধার, মনির হাসান, নিরুদ্দেশ নীহারিকা, খলদুন,বৃত্তবন্দী প্রমুখ ব্লগার (তারাও এই বিতর্কে দারুণ অংশ নিয়েছেন, পোস্টের কিছু যুক্তিসূত্র বা তথ্যসূত্র তাদের আলোচনা থেকে পাওয়া)।
[মুক্তমনা ব্লগে নভেম্বর ২০০৯ সালে প্রকাশিত]