বাংলাদেশের "পপুলারিস্ট" নাস্তিকদের চিন্তার ভুল দেখাতে গিয়ে প্রগতিশীল - সেক্যুলার - নারীবাদী হিসেবে পরিচয় দেয়া ফেসবুকার - ব্লগার দিলশান পারুল বলেছেন, "পপুলারিস্ট" নাস্তিকরা নাকি "ইতিহাসের সাথে অসততা করছেন", "নিজের মতো বিশ্লেষণ করার নামে তারা বিভিন্ন ভাবে তথ্য বিকৃত করেছেন"! তো, এই ইতিহাসের সাথে অসততা আর তথ্য বিকৃতির অভিযোগের পক্ষে ওনার যুক্তি কি? তিনি তাদের অসততার উদাহরণ দিয়েছেনঃ
অসংখ্য জায়গায় তারা ("পপুলারিস্ট" নাস্তিকরা) মহানবী (সাঃ) কে সরাসরি ধর্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন, পেডোফাইল বলেছেন, বহুগামী বলছেন।
আজকের নৈতিকতাকে আজ থেকে ১৪০০ বছর আগের সমাজের উপরে চাপিয়ে সেই আমলের কাউকে পেডোফাইল, ধর্ষক বলা যায় কি না- এই প্রশ্নটার যৌক্তিকতা মেনে নিয়েও বলতে হচ্ছে, কোরান- হাদিস আর নবীর মৃত্যুর পরের তিন-চারশ বছরের মধ্যেই লেখা নবীর জীবনী এগুলোকে যদি ঐতিহাসিক টেক্সট হিসেবে গণ্য করা যায়, ঘটনা হিসেবে অনেক কিছুরই ঐতিহাসিক সত্যতা খুজে পাওয়া যাবে, সে হিসেবে আজকের নৈতিকতা দিয়ে অতীত ঘটনাকে বিচারের অভিযোগ করা যেতে পারে, কিন্তু ইতিহাস বিকৃতি বা ইতিহাসের সাথে অসততার অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন! বরং ইতিহাসের সেই অধ্যায়গুলোকে আড়াল করার চেষ্টার মধ্যেই ইতিহাসের সাথে অসততা বিরাজমান।
ইসলামের নবীর বহুবিবাহ'র তথ্য কবে কে অস্বীকার করতে পারবে? অনেকগুলো বিয়ে করেছেন তিনি, একসাথে সর্বোচ্চ ৯ জন স্ত্রীর কথা জানা যায়। যে সময়ে তিনি কোরানের আয়াতের মাধ্যমে চারের অধিক বিয়েকে নিষিদ্ধ করে সাহাবিদেরকে সর্বোচ্চ চার স্ত্রীকে রেখে তার অধিক স্ত্রী-কের তালাকে বাধ্য করলেন, সেই সময়েও নবীর নিজের ৯ জন স্ত্রী ছিল। এবং তাকে আরেকটি আয়াত নাজিল করিয়ে আগের বিধানটি যে কেবল ও কেবলমাত্র ইসলামের নবীর জন্যে প্রযোজ্য না- সেই মর্মে আরেক বিধান বানাতে হয়েছিলো! আর, এই বহুগামিতা তথা বহুবিবাহের প্রথাটি তো কেবল ১৪০০ বছর আগের নবীর জীবনীতে সীমাবদ্ধ নেই, বরং আজকের এই আধুনিক যুগে এসেও অনেক মুসলমান কোরআনকে দেখিয়ে চার বিয়ের বৈধতা দাবি করে! সেই সাথে, কোরআনে কৃতদাসী বা যুদ্ধে হস্তগত নারীর সাথে বিবাহ বহির্ভূতভাবেই মিলিত হওয়াকে বৈধতা দেয়া হয়েছে, সেই বিধান মোতাবেক নবী নিজে এবং তাঁর সাহাবীদের বৈধ স্ত্রী বাদেও অনেক দাসীও ছিল, যাদের সাথে বিবাহ সম্পর্ক বাদেই মিলিত হয়েছিলেন তারা। আর, সেই বিধান দেখিয়ে দাসীদের সাথে মিলিত হওয়ার অধিকার পায় খোদ নবীর দেশের ও আশপাশের দেশের মুসলমানরা, যার সরাসরি ভুক্তভোগি সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের দেশ থেকে যাওয়া অসংখ্য গৃহকর্মী নারী! ফলে, নবীকে এবং ইসলামের বিধানকে বহুবিবাহের জন্যে অভিযুক্ত করা হলে, সেটা কিভাবে ইতিহাসের সাথে অসততা হতে পারে?
১৪০০ বছর আগের নৈতিকতায় যখন বাল্যবিবাহ খুবই স্বাভাবিক, নৈমত্তিক ও সামাজিকভাবে খুবই গ্রহণযোগ্য-প্রচলিত প্রথা ছিল, তখন আজকের যুগের নৈতিকতা চাপিয়ে দিয়ে নবী মুহম্মদকে পেডোফাইল বলা যায় না- এমনটা আমিও মনে করি। কিন্তু তার মানে এই না যে, বিয়ের সময়ে আয়েশা নিতান্তই শিশু ছিলেন না! দিলশানা পারুল যুক্তি করেছেন,
"ওই সময় যেহেতু জন্ম নিবন্ধীকরণ, মানে বার্থ সার্টিফিকেট বা ম্যারেজ সার্টিফিকেটের চল ছিলো না কাজেই বিবি আয়েশার প্রকৃত বয়স আসলে নিশ্চিত করে বলা যায়নি। এটা নিয়ে অনেক মুসলিম স্কলারের অনেক লিখা, কাউন্টার লিখা আছে"!
এমন খেলো যুক্তির মাধ্যমে ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টাকেই অসততা বলতে হয়। ঐ সময়ে বার্থ সার্টিফিকেট, ম্যারিজ সার্টিফিকেট না থাকার পরেও মুহম্মদ কত সালে জন্মিয়েছেন, কবে কত বছর বয়সে খাদিজাকে বিয়া করেছেন, বিয়ের সময়ে খাদিজার বয়স কত ছিল, মুহম্মদ কত বছর বয়সে ইসলাম প্রচার শুরু করেন, কত বছর বয়সে মারা গেলেন- এসবের কোন কিছু নিইয়েই কোন অনিশ্চয়তা নেই, আছে কেবল আয়শার বয়স নিয়ে? ব্যাপারটি খুব হাস্যকর হলো না? স্কলারদের মধ্যে যে মতবিরোধ, তা আসলে কি নিয়ে? বিয়ের বয়স নিয়ে, নাকি বাসর করেছেন কত বছর বয়সে, তা নিয়ে? হাদীসগুলোতে, সীরাত গ্রন্থে আয়েশার দুরকম বয়সের কথা উল্লেখ আছে- ৬ বছর আর ৯ বছর। ফলে, অনেক স্কলার ৬ বছরের পক্ষে মত দেন, অনেকে মত দেন ৯ বছরের পক্ষে। আর, একটা বড় অংশের স্কলাররা বলেন- মুহম্মদ আয়েশাকে বিয়ে করেন ৬ বছর বয়সে, কিন্তু বাসর করেন (মানে কনজুমেট করেন) আয়েশার বয়স যখন ৯ বছর। ৬, কিংবা ৯ বছরের শিশুকে বিয়ে করাটাকে বাল্যবিবাহই বলা হবে। ফলে, এখানেও ইতিহাসকে লুকানোর বা বিকৃত করার কিছু নেই। সমালোচনা করতে চাইলে- এতটুকুই করা যায়, সেই আমলের নৈতিকতা-মূল্যবোধে যে বাল্যবিবাহ খুব স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য প্রথা হিসেবে প্রচলিত, সেই প্রথাকে অপরাধ হিসেবে উপস্থাপন করা যায় না!
১৪০০ বছর আগের নৈতিকতা অনুযায়ী নবী মুহম্মদকে ধর্ষক বলা যাবে কি না, আমি নিশ্চিত নই। কিন্তু ইতিহাসের কথা যদি বলতে হয়, কে কবে এটা অস্বীকার করতে পারবে যে মুহম্মদের দুইজন স্ত্রী যুদ্ধ থেকে "হস্তগত" (গণিমতের মাল)? সাফিয়াকে বিয়ে করার আগে- সাফিয়ার গোত্রপ্রধান বাবা, সাফিয়ার স্বামী, সাফিয়ার পুরুষ আত্মীয় স্বজন- পাড়া প্রতিবেশী সহ পুরা গোত্রের সব পুরুষকে কচুকাঁটা করা হয়েছিলো! আর জুহারিয়াকে যুদ্ধ থেকে হস্তগত করার পরে জুহারিয়ার বাবা মুক্তিপন দিয়ে হলেও মেয়েকে ফেরত চেয়েছিলেন। ফেরত দেয়া হয়নি। ইসলামী স্কলার ইমাম কারযাভি এই বিয়েগুলোর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলেছিলেন, চাইলে নবী বিবাহ না করেও সাফিয়া ও জুহারিয়াকে ভোগ করতে পারতেন বা অন্য সাহাবীদের মাঝে বাটোয়ারা করে দিতে পারতেন (সে সময়ের প্রথা অনুযায়ী এবং ইসলামের বিধান মতে সেটায় কোন সমস্যাই হতো), কিন্তু সেটা না করে নবী তাদেরকে বিয়ে করে উম্মুল মুমিনিনের মর্যাদা দিয়েছিলেন! একজন নারী (সাফিয়া) তার বাবা, স্বামী, আত্মীয় স্বজন- সবাইকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেছেন, তার পরে সেই খুনীদের সর্দারকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন, এটা তার জন্যে মর্যাদার, নাকি অত্যাচার সেই সময়ের লোকজনই বলতে পারবে! কিন্তু, উম্মুল মুমিনিনের "মর্যাদা"র গল্পের একটি প্রশ্নই মাথায় আসে - সাফিয়া ও জুহারিয়ার বরাত দিয়ে কেন একটা হাদীসও নেই? আবু বকর কন্যা আয়েশা, উমর কন্যা হাফসা কিংবা মুহম্মদের আত্মীয় যয়নবের যে মর্যাদা ছিল, তা কি সাফিয়া, জুহারিয়া, মারিয়াদের ছিল? এমনকি খাদিজার মৃত্যুর পরে সন্তানদের দেখভালের জন্যে বিয়ে করা একটু বয়স্ক স্ত্রী সওদারও কি সমান মর্যাদা ছিল, যাকে নবী তালাক দিতে চেয়েছিলেন, কেবল নিজের ভাগ আয়েশাকে দান করার মাধ্যমে তালাক আটকাতে পেরেছিলেন? যাই হোক, মূল আলাপে আসি! মুহম্মদকে ঐ সময়ের নৈতিকতা দিয়ে ধর্ষক বলা যাবে কি না আমি নিশ্চিত নই, কেননা কোরান-হাদিসে যে নৈতিকতা দেখি, সেখানে ধর্ষণ নামের কোন অপরাধ খুজে পাই না, সেই তুলনায় জেনা বা ব্যভিচার হচ্ছে বিশাল অপরাধ। কিন্তু, আজকের নৈতিকতায় যুদ্ধবন্দী নারীকে যৌনভাবে ভোগ করাকে ধর্ষণ কি বলা যাবে? কোরআনে যখন যুদ্ধবন্দী নারী ও কৃতদাসীর সাথে যৌনমিলনকে যখন জায়েজ করা হয়, যখন কোরান-হাদিস দেখিয়ে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি ও "মালাউন" নারীকে গণিমতের মাল হিসেবে ভোগ করা জায়েজ বলে জামাত ফতোয়া দেয়, আজকেও যখন আইএস কুর্দি নারীদের ধরে ধরে যৌনকাজে ব্যবহার করছে, তখন এসবকে কি "ধর্ষণ" বলা যাবে না?
দিলশানা পারুল "পপুলারিস্ট" নাস্তিকদের সমালোচনায় বলেছেনঃ
"ধর্ম বা ধর্মীয় ইতিহাসের চরিত্রগুলো বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে এরা স্থান, কাল, পাত্র এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণ এভয়েড করেছে" ... "আপনি কথা বলছেন ৬ শতকের ঘটনাবলী নিয়ে! ... ১৪০০ বছর আগের নীতি নৈতিকতার সংজ্ঞা আর আজকের নীতি নৈতিকতার সংজ্ঞা কখনই এক না, নীতিনৈতিকতা এমনই একটি সামাজিক ইন্ডিকেটর যেটা দেশে দেশে সময়ে সময়ে পাল্টায়" ... ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরেক স্বঘোষিত "জ্ঞানী-পণ্ডিত" ও "সৃজনশীল" নাস্তিক ব্লগার - ফেসবুকার - লেখক গোলাম সারওয়ার একই রকম যুক্তিতে তাচ্ছিল্য করে বলেছেনঃ
এইসব নাস্তিকরা পড়ে আছে ৬ষ্ঠ, ৭ম শতকে ...!
এ ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণই একমত যে, নীতি নৈতিকতার ধারণা আপেক্ষিক, সবই স্থানিক, কালিক, এবং সামাজিক। ফলে, ইতিহাসের পাঠে সচেতন থাকা দরকার, এক যুগের, এক সমাজের নৈতিকতার চশমা দিয়ে অন্য যুগের, সমাজের মানুষকে বিচার করতে গেলে- ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই কেবল বাড়ে, তারচেয়েও বড় কথা- ইতিহাসের চরিত্রকে ভালো-মন্দ, ঠিক-বেঠিক এইরকম বাইনারী জাজ করাটাও অনেক সময়ে ইতিহাস পাঠে অপ্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়! কিন্তু "জ্ঞানী"-"সৃজনশীল" প্রগতিজীবীরা যেভাবে বলছেন, তথাকথিত "পপুলারিস্ট" নাস্তিকরা কি আসলে তেমনটাই করছেন? তারা কোন পরিপ্রেক্ষিতে ১৪০০ বছর আগের ব্যক্তিকে আজকের নৈতিকতা দিয়ে বিচার করছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতটা কি ওনারা জানেন না? কথিত "পপুলারিস্ট" নাস্তিকদের আলোচনার অভিমুখ কি সেইসব সেক্যুলার, প্রগতিশীল, নাস্তিক বা অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে দাবি করা লেখক-পাঠকরা, যারা নবীকে একজন ১৪০০ বছর আগে একজন রক্ত-মাংসের মানুষ হিসেবে মনে করে? নাকি সেইসব ধার্মিক ব্যক্তি, যারা নবী মুহম্মদকে কেবল ১৪০০ বছর আগের একজন মানুষ মনে করে না, বরং মুহম্মদকে সর্বকালের সর্বযুগের, সকল সমাজের মধ্যে সর্বসেরা মানুষ, আল্লাহর রাসুল, যেকোন রকম পাপ-অন্যায়-অপরাধের উর্ধ্বে থাকা একজন প্রেরিত মহাপুরুষ হিসেবে বিশ্বাস করে? তাহলে, সেইসব বিশ্বাসী ব্যক্তিদের বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচারণ করতে যদি কেউ বলেন, সর্বকালের- সর্বযুগের নৈতিকতার নিরিখে সেরা তো দূরের কথা, আজকের নৈতিকতা অনুযায়ীও নবী আদর্শ চরিত্র নন। মুহম্মদের মত আজ কেউ ৬ বা ৯ বছরের কন্যাশিশুকে বিয়ে করতে গেলে কিংবা আজ যদি মুহম্মদ নিজে সেই কাজটা করতে যান, তাকে পেডোফাইল ছাড়া আর কি বলা হবে? আজ কৃতদাসীকে, যুদ্ধবন্দীকে কিংবা শিশুকে ভোগ করতে চাইলে, তাকে কি ধর্ষক বলা হবে না? আজকের যুগে এসে নয় জন স্ত্রী নয়, দ্বিতীয় বিয়ে করতে গেলেও নবীকে যদি আগের স্ত্রী জুতার বাড়ি দিতে চায় তাতে কি খুব বেশী দোষ হবে? - এখন নাস্তিকরা এসব কথা যদি এই কারণে বলে যে, চারদিকের মুমিন ব্যক্তিরা যারা ১৪০০ বছর আগের আইডিওলজিকে সুপ্রিম হিসেবে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে ও প্রচার করে, তাদেরকে পাল্টা জবাব দিতেই এভাবে বলা; তবে কোনভাবে কি বলা যাবে যে, তারা আজকের নৈতিকতা ১৪০০ বছর আগের সমাজের উপরে চাপিয়ে দিচ্ছে?
হ্যাঁ, বাংলাদেশের ও দুনিয়ার নাস্তিকদের অনেকের সাথেই আমার বড় রকম মতভিন্নতা আছে। এমনকি নাস্তিকতা- মুক্তবুদ্ধি- মুক্তচিন্তা প্রসারের কর্মপদ্ধতি নিয়েও আমার অনেক ব্যাপারে অনেকের সাথেই দ্বিমত আছে, ভিন্নতা আছে। রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে যদি কথা বলতে যাই- তাইলে তো অনেকের সাথেই আমি একেবারেই ভিন্নমেরুতে অবস্থান করি। আসিফ মহিউদ্দিন, সুষুপ্ত পাঠক, তসলিমা নাসরিন শুধু নয়- অভিজিৎ রায়ের সাথেও অনেকবার তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলাম। স্যাম হারিসের মত ওয়ার অন টেররের সমর্থক নাস্তিককে মাথায় তুলে রাখার প্রয়োজন কোনদিন দেখিনি। রিচার্ড ডকিন্সের সাথেও সবসময় সব বিষয়ে একমত নই। এরকম দ্বিমত, ভিন্নমত, ভিন্নপন্থা যেকেউই যাকারোর সাথে করতেই পারে। কিন্তু, দ্বিমত, ভিন্নমত, ভিন্নপন্থার জন্যে কাউকে বা তাদের সমচিন্তার বা অনুসারি নাস্তিকদের গ্রুপবন্দী করে একটা নাম দিয়ে ট্যাগিং করে ডেমোনাইজ করা কেমন ধরণের প্রগতিশীলতা, কেমন ধরণের সৃজনশীলতা? চিন্তা-মত-পথকে তো চিন্তা দিয়েই পরাস্ত করতে হয়, নয় কি? কার কি শিক্ষাগত যোগ্যতা, কে কেমন ও কতটুকু সৃজনশীল, কোন বিষয় নিয়ে কে আগ্রহী হচ্ছে, সেগুলোর রুচি কি, ইত্যাদি ইত্যাদি - এসব আলাপ কি কোনদিন চিন্তাকে মোকাবেলা করার আলাপ হতে পারে? আর, সেখানে এসব স্বঘোষিত প্রগতিশীল-সৃজনশীল সেক্যুলাররা দলবেধে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নোংরা ও মিথ্যায় ভরপুর অভিযোগ আনছেন- যেগুলোর অধিকাংশই আসলে কোন অভিযোগই নয়, সিম্পলি আরেকজনের ব্যক্তিগত জীবন নিয়া নোংরা গসিপিং! এসবের মধ্য দিয়ে বস্তুত তারা নিজেদেরকেই মানুষ হিসেবে নিচে নামিয়ে যাচ্ছেন, তা কি তারা বুঝতে পারছেন?